ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কথা শুনলেই বেশিরভাগ মানুষ বলে থাকেন দালাল ছাড়া সম্ভব না। ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা লাগে ইত্যাদি। ডিজিটাল বাংলাদেশের ডিজিটাল একটু স্লো হলেও বর্তমানে সরকার অনেক সুবিধা দিচ্ছে। আর এর মধ্যে সম্প্রতি শুরু হওয়া ই-পাসপোর্ট তার একটি অন্যন্য উদাহরণ। তেমনি ড্রাইভিং লাইসেন্স ও যখন ডিজিটাল তাই ঘরে বসেই করুন লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স।
ই-পাসপোর্ট শুরু হওয়াতে দালালদের থেকে যেমন মুক্তি মিলেছে তেমনি হয়েছে সহজ। মাত্র ২১ দিনেই হাতে পেয়ে যাবেন আপনার কাঙ্ক্ষিত পাসপোর্ট। এমনকি তার ও আগে পেয়ে যাবেন। নতুন ই-পাসপোর্ট অনেকেই ৮-১২ দিনেও হাতে পেয়েছেন। আমি ২৫দিনে পেয়েছি কারন ভেরিফিকেশন দুই যায়গায় ছিল। আর সবকিছু করেছি নিজে নিজেই।
যাই হোক এবার আসি ড্রাইভিং লাইসেন্স এ। সরকার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর দিকেও নজর দিয়েছে আর তার ই ধারাবাহিকতায় সহজ হচ্ছে সবার জন্য। নিজেদের স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স করে ফেলুন নিজে নিজেই কোনরকম প্রতারতক বা দালাল ছাড়াই।
ঘরে বসেই করুন লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স
ড্রাইভিং লাইসেন্স এর প্রথম ধাপ হলো লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স। আর এটি আপনি নিজেই ঘরে বসে করে নিতে পারেন। চলুন দেখি কিভাবে করবেন লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স।
প্রথম ধাপঃ
প্রথমেই বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টাল (বিএসপি) বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এর ওয়েবসাইট bsp.brta.gov.bd এখানে প্রবেশ করুন। উপরে ডান পাশে নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রার এ ক্লিক করুন। এবার আপনার সকল তথ্য সঠিকভাবে দিয়ে একাউন্ট খুলুন। ইমেইল এবং মোবাইল ভেরিফাই করে নিন।
দ্বিতীয় ধাপঃ
একাউন্ট খোলা হয়ে গেলে লগিন করে বাম পাশে অনেক গুলো অপশন দেখতে পাবেন। সেখান থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স এ ক্লিক করে ধাপ গুলো দেখতে পারবেন। প্রথমেই লার্নার লাইসেন্স এপ্লিকেশন এ ক্লিক করুন। এখানে আপনার ছবির সাইজ, অন্যান্য ডকুমেন্টস এর সাইজ এর তথ্য দেয়া থাকবে যা আপনি আগেই রেডি করে রাখবেন। নিচে ডান কর্ণারে “I Agree” বাটনে ক্লিক করবেন। ক্লিক করার সাথে সাথেই আপনার সামনে ফর্ম চলে আসবে যা আপনি ফিলাপ করবেন সঠিক ভাবে।
১। লাইসেন্স এর ধরন
*আপনি পেশা হিসেবে নিলে পেশাগত বা Professional সিলেক্ট করবেন।
*আপনি যদি নিজের জন্য অর্থাৎ ড্রাইভিং কে পেশা হিসেবে না নেন তাহলে অপেশা গত বা Non-Professional অপশন সিলেক্ট করবেন।
২। আপনার ছবি দিবেন। ডানপাশে ছবির বক্স রয়েছে সেখানে ক্লিক করলেই ফাইল অপ্সহন ওপেন হবে।
*ছবির সাইজ ৩০০X৩০০ দিবেন এবং সাইজ ১৫০ কেবির বেশি হতে পারবেনা।
৩। এবার সেকশন A তে আপনার সকল তথ্য পূরণ করুন সঠিকভাবে। স্টার মার্ক করা লাল চিহ্ন স্থান অবশ্যই ফিলাপ করতে হবে।
৪। সেকশন B
এখানে চাইলে আপনার ইন্সট্রাকটরের তথ্য দিতে পারেন, না দিলেও সমস্যা নেই যেহেতু স্টার মার্ক দেয়া নেই। এক্সাম ভেন্যু আপনার বর্তমান ঠিকানা অনুযায়ী অটো সিলেক্ট হয়ে যাবে।
* আপনি কি শুধু মোটরবাইক এর জন্য করবেন নাকি হালকা গাড়ির জন্য ও? টিক মার্ক দিয়ে দিন। যদি একটি করেন একটি আর দুইটি করলে দুইটিতেই টিক দিন।
৫। এটাচমেন্ট ফাইল সমূহঃ
* মেডিকেল সার্টিফিকেট
* NID অথবা জন্ম নিবন্ধন বা পাসপোর্ট
* এডুকেশনাল সার্টিফিকেট
* ইউটিলিটি বিলের কাগজ
আরোও পড়ুনঃ যেভাবে ই-পাসপোর্ট করবেন খুব সহজেই
মেডিকেল সার্টিফিকেট এর ফর্ম এপ্লাই করার শুরুতেই দেখবেন আপনাকে জানিয়ে দিচ্ছে ডাওনলোড করার জন্য। অর্থাৎ এপ্লাই এ ক্লিক করলেই আপনাকে একটি ফাইল দেয়া হবে মেডিকেল সার্টিফিকেট। অথবা নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন আমি দিয়ে দিবো।
এটি পূরণ করে নিন যেকোনো সরকারি হাসপাতাল থেকে অথবা নিজের পরিচিত এমবিবিএস ডাক্তার এর মাধ্যমে।
ইউটিলিটি বিলের কাগজ প্রয়োজন হয় যদি আপনার বর্তমান ঠিকানা ভিন্ন হয়। অর্থাৎ স্থায়ী আর বর্তমান ভিন্ন হলে।
এটাচমেন্ট ফাইল গুলোর সাইজ প্রতিটির সর্বোচ্চ ৬০০ কেবির করে আপলোড দিবেন। এবং সেভ বাটনে ক্লিক করবেন।
আরোও পড়ুনঃ How to go to CANADA as Immigrant or student?
৪র্থ বা ফাইনাল ধাপঃ
সেভ ক্লিক করলে আপনার সকল তথ্য দেখাবে। এবার ভালোভাবে চেক করে নিচে ডান পাশে টাকা জমা দেয়ার অপশন পাবেন সেখানে ক্লিক করলে আপনাকে দেখানো হবে কোন মাধ্যমে পে করতে চান?
ব্যাংক, রকেট, বিকাশ সহ অনেক অপশন পাবেন। যেকোনো একটি সিলেক্ট করে নিজের মত পে করে দিন। আমি বিকাশে পে করেছি। বিকাশের পেমেন্ট গেটওয়ে তে খুব সহজেই পে করে দিলাম।
পে করার সাথে সাথেই আপনি পেয়ে যাবেন আপনার লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স। এবার সেটি ডাওনলোড করে নিন অথবা প্রিন্ট করে নিন।
আর কোন তথ্য জানার থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করুন। শুধু শুধু দালাল কে কেন টাকা দিবেন? নিজে করুন নিজের মত করে করুন। শুভ কামনা সবার জন্য।