লাইফ স্টাইলস্বাস্থ্য বার্তা

শিশুদের সচেতন করুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ে মানুষের উদ্বেগ বাড়ছে। এরমধ্যে শিশুরাও রয়েছে যারা সাধারণত বাবা মায়ের কাছেই কোনও কিছু বুঝতে চায়। শিশুদের সচেতন করুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে।

শিশুকে কিভাবে বোঝাবেন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে?

এবিষয়ে যুক্তরাজ্যের চিকিৎসক ডা. পুনম কৃষ্ণা বলেন, শিশুকে বুঝিয়ে বলা যে তোমার যেমন ঠাণ্ডা লাগে, পেট খারাপ হয়, বমি হয় এই ভাইরাসটি সেরকম।

তিনি বলেন, অভিভাবকদের উচিৎ শিশুদের সাথে বিষয়টি নিয়ে খোলাখুলি আলাপ করা। না হয় সে স্কুলে বা বন্ধুদের কাছ থেকে ভুল তথ্য পাবে। সে সঠিকভাবে তথ্যটি না পেলে এতে তার ক্ষতি হবে।

শিশুদের মনোবিজ্ঞানী ডা. রিচার্ড উলফসন মনে করেন শিশুদের বয়সের উপর নির্ভর করবে তার সাথে কিভাবে কথা বলতে হবে।

তিনি বলেন, ছয়, সাত বছর বয়সী বা তাদের নিচে যাদের বয়স তারা যা শুনবে তাতেই বিচলিত হবে। কারণ তাদের বাবা-মায়েরা তাদের আশ পাশেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছেন।

তিনি বলেন, এটা তাদের জন্য ভীতিকর হতে পারে। প্রথমত ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে তাদেরকে আশ্বস্ত করুন। আপনি হয়ত জানেন না কী হতে যাচ্ছে, কিন্তু তাদের বলুন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।

ডা. উলফসন বলেন, শিশুদের শুধু আস্বস্থ করা নয়, রোগ প্রতিরোধ সম্পর্কে তাদের ক্ষমতা বাড়ানো দরকার। তাদের বাস্তবসম্মত পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে। যাতে করে তারা নিজেদের আক্রান্ত হওয়া থেকে বাঁচাতে পারে।

তিনি বলেন, আমাদের উচিৎ স্বাস্থ্য ভালো রাখার কিছু উপায় আছে যা শিশুকে বলতে ও শেখাতে হবে। যেমন নিয়মিত হাত ধোয়া। সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে শুধু এটা বলে বসে না থেকে তারা নিজেরা করতে পারে এমন কিছু তাদের করতে দেয়া ভালো।

ডা. কৃষ্ণা বলেন, শিশুর সঙ্গে হাত ধোয়ার মতো বিষয় নিয়ে গল্প করতে হবে। শিশুকে আস্বস্ত করা এবং একই সাথে কিছু বাস্তবসম্মত প্রতিরোধমূলক কৌশল শেখানোই হবে অভিভাবকদের জন্য সবচাইতে ভালো পরামর্শ। শিশুরা অন্যমনস্ক হতে পারে, খেলায় ব্যস্ত হয়ে যেতে পারে বা তার মনোযোগ কম হতে পারে তাই তাকে মাঝে মাঝে মনে করিয়ে দেয়া।

ডা. কৃষ্ণা বলেন, সাধারণত এটি রোগ জীবাণু ছড়ানোর অন্যতম কারণ। তাদেরকে পরিচ্ছন্নতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেয়া মানে চারপাশের মানুষজনকেও নিরাপদে থাকতে সাহায্য করা।

শিশুদের উদ্বেগের অন্যতম কারণ হতে পারেন তাদের অভিভাবকরাই। ডা. কৃষ্ঞা বলেন, অপেক্ষাকৃত ছোটরা যদি দেখে তাদের বাবা-মায়েরা নিজেরা উদ্বিগ্ন, তারা তাদের নানা ধরনের আলাপচারিতা শোনে এবং সেখান থেকে নিজেদের তথ্য সংগ্রহ করে।

তিনি বলেন, বাবা-মায়েরা শিশুদের আশপাশে কেমন আচরণ করবেন সে ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিৎ। কিন্তু তারা স্কুলে কী শুনছে সেটির উপরে নিয়ন্ত্রণ রাখা খুব মুশকিল।

ডা. উলফসন বলেন, শিশুরা তথ্যের ব্যাপারে তাদের বন্ধুদের উপর অনেক বেশি নির্ভর করে। সমস্যা হল কিশোর বয়সী কাউকে এটা বলে আস্বস্ত করা যাবে না যে সবকিছু ঠিক হয় যাবে। তার মতে, এই বয়সীরা অভিভাবকদের সাথে বিষয়টি নিয়ে তর্ক করতে পারে। তারা বাবা-মা বললেই সবকিছু মেনে নেবে না।

তবে তার মতে বয়স যতই হোক না কেন শিশুরা যাতে পরিবারে সবকিছু আলাপ করতে পারে সে রকম পরিবেশ তৈরি করাই মঙ্গল।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please Unblock Your Adblocker!