ডেঙ্গু ও করোনাভাইরাস এর উপসর্গের মধ্যে পার্থক্য
বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে লক্ষাধিক মানুষের। এই ভাইরাস নিয়ে মানুষের আতঙ্কের শেষ নেই। কারণ, একদিকে ভাইরাসটি অত্যাধিক মাত্রায় সংক্রামক, অপরদিকে এর কোনও প্রতিষেধক বা সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা আবিষ্কৃত হয়নি।
বিশ্বের প্রায় ২১১টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এই মরণঘাতী ভাইরাস। এর ছোবল থেকে বাদ পড়েনি বাংলাদেশও। দেশে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৬২১, মৃত্যু হয়েছে ৩৪ জনের।
এ কারণে, শরীরে এই ভাইরাসের লক্ষণ-যেমন, জ্বর, সর্দি, কাশি থাকলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন সবাই।
এদিকে দেশে শুরু হয়েছে ডেঙ্গুর মৌসুম। গত বছর ডেঙ্গুর মারাত্বক প্রকোপের পর এবারও বিস্তার ঘটাচ্ছে রোগটি। প্রতিদিনই নতুন নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে।
করোনাভাইরাসের বিস্তারের কারণে এবার ডেঙ্গু তেমন আতঙ্ক ছড়াতে পারেনি। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, গত বছরের থেকে এবার ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস, ডেঙ্গু ও সাধারণ ফ্লু-তিনটি কারণে
যে কেউ জ্বরে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই জ্বর আসলে আতঙ্কিত না হয়ে অন্য উপসর্গের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। এজন্য কোভিড-১৯ ও ডেঙ্গুর উপসর্গগুলো সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
আরোও পড়ুনঃ গলা ব্যথা হলে কী করবেন: করোনাভাইরাস মহামারী
ডেঙ্গুর উপসর্গ
ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটে এডিস মশা থেকে। ভাইরাস বহনকারী এডিস মশা কামড়ালে মানুষের শরীরে ডেঙ্গুর সংক্রমণ হয়।
সাধারণভাবে ডেঙ্গুর লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। ১০১ ডিগ্রি থেকে ১০২ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকতে পারে। জ্বর একটানা থাকতে পারে, আবার ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে দেবার পর আবারো জ্বর আসতে পারে। এর সাথে শরীরে ব্যথা মাথাব্যথা, চেখের পেছনে ব্যথা এবং চামড়ায় লালচে দাগ (র্যাশ) হতে পারে। তবে এগুলো না থাকলেও ডেঙ্গু হতে পারে।
জ্বর কমার প্রথম দিন রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে পারে। বার বার বমি হয় এবং মুখে তরল খাবার খেতে সমস্যা হয়। পেটে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। এছাড়া শরীর মুখ বেশি দুর্বল অথবা নিস্তেজ হয়ে পড়ে এবং শরীরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক কমে যায়।
করোনাভাইরাসের উপসর্গ
এই ভাইরাস সংক্রমণের প্রধান লক্ষণ হলো শ্বাসকষ্ট হওয়া, জ্বর, গলা ব্যথা এবং কাশি। কিন্তু এর পরিণামে অরগ্যান ফেইলিওর বা দেহের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়া, নিউমোনিয়া এবং মৃত্যু ঘটতে পারে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটি শরীরে প্রবেশ করার পর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে প্রায় পাঁচ দিন সময় লাগে। প্রথম লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। তার পর দেখা দেয় শুকনো কাশি। এর এক সপ্তাহের মধ্যে দেখা দেয় শ্বাসকষ্ট।
সাধারণ ফ্লু
ফ্লু সাধারণত মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জা হিসাবেও পরিচিত। এটি সাধারণ শ্বাস-প্রশ্বাসের মধ্যে এক ধরনের ভাইরাল সংক্রমণ, যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নাক, গলা এবং ফুসফুসকে সংক্রমিত করে। ফ্লু-র কিছু সাধারণ লক্ষণ হলো-জ্বর, ক্লান্তি, সর্দি, শরীর ব্যথা, নাক দিয়ে পানি গড়া, গলা ব্যথা, নাক বন্ধ, কাশি, ডায়রিয়া (মাঝে মাঝে বাচ্চাদের মধ্যে)।
ভাইরাল ফ্লু সাধারণত পাঁচ থেকে সাত দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। সর্দি বা কোভিড-১৯ এর বিপরীতে, ডাক্তারদের দেয়া ওষুধ মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জাকে সফলভাবে নিরাময় করতে পারে।