বিভিন্ন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠানে শিক্ষানবিশ পদে যোগদানের ক্ষেত্রে জীবনবৃত্তান্ত বা সিভি জমা দিতে হয়। সিভির সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ একটি সংযুক্তি হলো কভার লেটার।
নবীন শিক্ষার্থীরা অনেক সময় দ্বিধায় পড়ে যান, কী লিখব, কীভাবে লিখব। কাজের সঙ্গে সংগতিহীন কভার লেটার চাকরিপ্রার্থীর দুর্বলতা প্রকাশ করে।
কার্যকর কভার লেটার তৈরির জন্য পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্সি প্রোগ্রামের চেয়ারপারসন, বিজনেস কমিউনিকেশন পরামর্শক ও সহযোগী অধ্যাপক সাইফ নোমান খান
কাজের সঙ্গে মিল রাখতে হবে
কভার লেটারে যা লিখবেন, তা যেন যে পদের জন্য আবেদন করছেন, তার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হয়। প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, ওয়েবসাইট, লিংকডইন প্রোফাইল থেকে বিস্তারিত জেনে সে অনুযায়ী লিখতে হবে। ১০টি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলে ১০ রকমের লেখা লিখতে হবে। একেক প্রতিষ্ঠান, একেক কাজের কভার লেটারের বিষয় ভিন্ন রকম।
সম্বোধন ও শুরুর ওপর গুরুত্ব দিন-
কখনোই কভার লেটারের শুরুতে “To Whom it May Concern” দিয়ে শুরু করবেন না। প্রচলিত “Dear Sir” দিয়েও শুরু না করার চেষ্টা করুন। ওয়েবসাইট ও লিংকডইন থেকে জানতে হবে প্রতিষ্ঠানের প্রধান বা নিয়োগদাতার পদবি কী।
প্রথম লাইন থেকেই আপনাকে নিয়োগদাতাকে আগ্রহী করে তুলতে হবে। ইন্টারনেট থেকে কোনো কভার লেটার হুবহু অনুকরণ না করে নিজের আগ্রহ ও উৎসাহ প্রকাশ পায়, এমন বাক্য দিয়ে কভার লেটার শুরু করুন।
গুগলের সাহায্য নিয়ে আপনি কভার লেটারের উদাহরণ দেখতে পারেন, তবে হুবহু অনুকরণ করবেন না. Tips
দক্ষতা ও আগ্রহের কথা লিখতে হবে-
যে কাজে আপনি পারদর্শী, কিংবা যেসব দক্ষতা আপনার আছে—তা কীভাবে প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজে আসবে, সেটিই লিখতে হবে। যে কাজের জন্য আপনি আবেদন করছেন, কেন আপনি সেই কাজের যোগ্য, যুক্তিসহকারে সেটি তুলে ধরুন। অপ্রাসঙ্গিক কথা লিখবেন না।
ভুল যেন না হয়
অনুকরণ করে লিখতে গেলে অনেক সময় ভুল হয়ে যায়। গুগলের সাহায্য নিয়ে আপনি কয়েকটি উদাহরণ দেখে নিতে পারেন, কিন্তু একটি লাইনও ‘কপি-পেস্ট’ করবে না। ব্যাকরণ, বাক্য কিংবা তথ্যে ত্রুটি রাখা যাবে না।
অনুকরণ করতে গিয়ে ভুল করে বসবেন না যেন! নিত্যখবর
নিজেকে প্রকাশ করতে হবে
জীবনবৃত্তান্ত মূলত একঝলকে আপনার যোগ্যতা ও দক্ষতার দিকটি তুলে ধরে। অন্যদিকে কভার লেটারে লিখবেন—আপনি যে প্রতিষ্ঠানে যে কাজের জন্য আবেদন করছেন তার মূল্যবোধ, পেশাদারত্ব, লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের সঙ্গে কীভাবে মানিয়ে নিতে পারবেন, কীভাবে দলের সদস্য হিসেবে আপনি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবেন। স্পষ্ট ভাষায় এটি উল্লেখ করতে হবে।
সাজিয়ে লিখতে হবে
ধরুন, যা যা প্রয়োজন, সবই আপনি লিখলেন, কিন্তু তথ্যগুলো গোছানো নয়, সে ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা আকৃষ্ট না-ও হতে পারেন। একটি এ-ফোর আকৃতির কাগজে ৩ বা ৪ অনুচ্ছেদে কভার লেটার লিখতে হবে। প্রতিটি অনুচ্ছেদে ৪ থেকে ৫টি বাক্য যেন থাকে। শুরুতে কী লিখবেন, মধ্যে কী থাকবে, কী লিখে শেষ করবেন, আগেই তার একটা পরিকল্পনা করে নিন।
অভিজ্ঞতার সংখ্যা মাত্রিক বিশ্লেষণ প্রকাশ করুন
কভার লেটার লেখার সময় আপনি কোন কোন কাজে কেমন পারদর্শী, তার সংখ্যা মাত্রিক উপস্থাপনার চেষ্টা করুন। যেমন, আপনি হয়তো ৪টি স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে ১৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের নেতৃত্বে ছিলেন। কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠানে শিক্ষানবিশ হিসেবে উন্নয়ন প্রকল্পের বাজেট তৈরি করেছেন। এসব বাস্তব উদাহরণে লিখতে হবে।
নিয়োগকর্তার ভাষা বোঝার চেষ্টা করুন
একেক প্রতিষ্ঠানের ভাষা একেক রকম হয়। আপনাকে প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট, লিংকডইন বা ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে সেই প্রতিষ্ঠানের ভাষা, রীতি ও মূল্যবোধ বুঝতে হবে। চাকরিদাতার চাহিদা বুঝে লিখতে পারলে তা বেশ কার্যকর হয়।
সংক্ষিপ্ত ও প্রাঞ্জল ভাষায় লিখুন
কভার লেটার পড়ে যেন বিরক্তি না আসে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। চেষ্টা করুন ছোট ছোট বাক্যে নিজের আগ্রহ ও উদ্দীপনা প্রকাশ করতে। নিয়োগকর্তা যেন আপনার সঙ্গে কথা বলছেন, এমনভাবে কভার লেটার তৈরি করুন।
Great things in business are never done by one person. They’re done by a team of people. Steve Jobs
সিভি / কাভার লেটার এর সকল তথ্য একত্রে আমরা আপনাদের কে দেয়ার চেষ্টা করছি। প্রতিনিয়ত আপডেট পেতে আমাদের সাইটে ভিজিট করুন এবং আরো কি জানতে চান আমাদের কে কমেন্টে জানান।
ধন্যবাদ!
আমাদের ফেসবুক পেজ এবং ফেসবুকে গ্রুপ।